এই পরিস্থিতিতে আমেরিকার রিপাবলিকান সাংসদের ক্ষোভ গিয়ে পড়েছে ভারত, চীন ও ব্রাজিলের মতো দেশের ওপর। তাঁদের অভিযোগ, এই দেশগুলো রাশিয়ার যুদ্ধযন্ত্র চালু রাখতে জ্বালানি তেল ও অন্যান্য পণ্য কিনে অর্থ সাহায্য করছে। ফলে প্রস্তাব উঠেছে—এই দেশগুলোর ওপর ৫০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হোক।
বর্তমানে ভারতের জ্বালানি চাহিদার বড় অংশই মেটানো হয় রাশিয়া থেকে আমদানি করা তেল দিয়ে। চীনও একইভাবে রাশিয়ার বড় ক্রেতা। ব্রাজিলসহ আরও কিছু দেশও রাশিয়ার গ্যাস ও তেলের ওপর নির্ভরশীল। মার্কিন আইনপ্রণেতাদের মতে, এই বাণিজ্যই পুতিনকে ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে সাহস জোগাচ্ছে।
এই প্রেক্ষাপটে রিপাবলিকান সেনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম ও রিচার্ড ব্লু মেন্থাল মার্কিন কংগ্রেসে একটি বিল পেশ করেছেন। প্রস্তাব অনুযায়ী, যেসব দেশ রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের পণ্যের ওপর ৫০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হবে। আগামী আগস্ট মাসে এই বিলটি সেনেটে উত্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে বিলটির পক্ষে ৮৪ শতাংশ সমর্থন মিলেছে।
রিপাবলিকান সেনেটর রিচার্ড ব্লু মেন্থাল সামাজিক মাধ্যমে এক্স (পূর্বে টুইটার) পোস্ট করে এই বিলকে রাশিয়ার মতো ‘অপরাধীর’ বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগের যথোপযুক্ত উপায় হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন, “এই বিলের মাধ্যমে ভারত, চীন ও ব্রাজিলের মতো দেশগুলোকে রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসার জন্য কঠিন শাস্তির মুখে পড়তে হবে।”
এমন সময়ে এই বার্তা এল, যখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের ইঙ্গিত দিয়েছেন। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় ট্রাম্প বলেন, “ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে রাশিয়াকে বহুবার বলা হয়েছে। যদি আগামী ৫০ দিনের মধ্যে পুতিন যুদ্ধবিরতিতে না আসেন, তবে রাশিয়ার পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হবে।”
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ট্রাম্প রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার বিষয়ে বিশেষ উদ্যোগী হয়েছেন। যদিও কয়েকবার পুতিনের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা হয়েছে, তবুও উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি। বিশ্বে নিজেকে শান্তির প্রতীক হিসেবে তুলে ধরতে যুদ্ধ থামানো ট্রাম্পের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ফলে রাশিয়া এবং তাদের বাণিজ্যিক মিত্রদের ওপর শুল্ক আরোপের মাধ্যমে পুতিনকে আলোচনার টেবিলে আনতেই আমেরিকার এই কৌশল বলে মনে করা হচ্ছে।